ভিসি অপসারণের দাবিতে আবারও বিক্ষোভ জাবিতে

0

ঢাকা অফিস: উপাচার্যের (ভিসি) অপসারণ এবং ছাত্রলীগের হামলার বিচারের দাবিতে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় দুপুরে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবন থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের পাশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, ‘চলমান আন্দোলন থেকে আমরা পিছু হটবো না। আমাদের দমানোর জন্য উপাচার্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন, ছাত্রলীগ দিয়ে পিটিয়েছেন, মামলা করিয়েছেন। উপাচার্যকে জানিয়ে দিতে চাই, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতি আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল, থাকবে। বিজয় সুনিশ্চিত করেই শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন। সবাইকে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের সঙ্গে থাকার আহ্বান জানাই।’ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি আর সন্ত্রাস জমজ ভাইয়ের মতো। একসঙ্গে চলে। যে জায়গাই দুর্নীতি হোক, সেখানে সন্ত্রাস থাকবেই। দুর্নীতি যদি রাষ্ট্র করে, সে ক্ষেত্রে সন্ত্রাসের ভূমিকায় থাকে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর যদি কোন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়, সেখানে লাঠিয়াল বাহিনী থাকতে পারে।’ আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘সারাদেশে ধর্ষণ বেড়ে গেছে। আগের বছরের তুলনায় পরের বছর দ্বিগুন। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। বিদেশে শ্রমিক মারা যাচ্ছে। সরকার যখন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করে, জনগণের কথা না ভাবে; তখন ধর্ষণ, দুর্নীতি, সড়ক দুর্ঘটনা ইত্যাদি বেড়ে যায়। তারই অংশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই দুর্নীতি ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসবের বিরুদ্ধে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।’ নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলি-এর অর্থ হলো, অতীতের সব উপাচার্যের দুর্নীতি ও স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধেও কথা বলি। আগামীতেও এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে দেখতে চাই।’ নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মীর্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা অহিংস আন্দোলন করছি, আমাদের উচ্চারণ কখনও বন্ধ হবে না।’ এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কার্যকরী সদস্য মিখা পিরেগু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সহ-সভাপতি সম্পদ অয়ন, জাহাঙ্গীরনগর শাখা সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে কয়েক মাস ধরে চলা ধারাবাহিক আন্দোলনের একপর্যায়ে গত ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় তার বসভবন ঘেরাও করে আন্দোলনকারীরা। পরদিন ৫ নভেম্বর আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সেদিনই এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক মাস বন্ধ থাকার পর গত ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়।

Share.