মুজিববর্ষ উপলক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন

0

ঢাকা অফিস: এবার মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মানবিক কারণে মুক্তি দিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ ওই আবেদন পাঠিয়েছেন। ড. আকন্দের আবেদনে বলা হয়, আগামী ১৭ মার্চ মুজিব শতবর্ষ পালনের উদ্বোধনী দিনে সংবিধানের প্রস্তাবনা ও ১১, ৪৮(৩) এবং ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে মানবিক কারণে এবং তার বয়স, প্রথম শ্রেণির নাগরিক ও অসুস্থ নারী হওয়ায় তাকে জেল থেকে মুক্তির আরজি জানাচ্ছি। আবেদনে আরও বলা হয়, সমগ্র বিশ্বের মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এর কারণে বিভিন্ন দেশের বন্দিদের মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষও করোনায় আক্রান্ত। এই অবস্থায় খালেদা জিয়াসহ সকল অসুস্থ, বৃদ্ধা, জ্যেষ্ঠ নারী কারাবন্দি নাগরিকদের সংবিধান অনুসারে দণ্ড মওকুফের জন্য জনস্বার্থে আরজি জানাচ্ছি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, যুদ্ধে সাহসিকতার ফল স্বরূপ বীর উত্তম খেতাবও পেয়েছেন। আজ যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন তাহলে স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন সাহসী বীর উত্তম খেতাবধারীর স্ত্রীকে এভাবে জেলে রেখে শতবর্ষ পালন করতেন না, কারাদণ্ড হলেও মুক্তি দিয়ে শতবর্ষ হতো। মুজিব শতবর্ষ ১৬ কোটি মানুষ স্মরণ করছে। বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত ক্ষমাশীল ছিলেন। ক্ষমা স্বর্গীয় জিনিস। ক্ষমা মানুষকে সম্মান দেয় এবং জনসমর্থন বাড়ে। আবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর ও জনগুরুত্বপূর্ণ। তাই জনস্বার্থে যে কোনও সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি কারও জন্য ক্ষমা চাইতে পারেন। তাই খালেদা জিয়াকে যে কোনও শর্তে সবধরনের দণ্ডের মার্জনা, বিরাম মঞ্জুর এবং দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার আরজি জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, দুর্নীতির দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুটি মামলার রায় অনুযায়ী তাকে ১০ বছর কারাগারে থাকতে হবে। এ দুটিসহ তার বিরুদ্ধে মোট ৩৩টি মামলা বিচারাধীন। পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে রাখা হলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেখান থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে এনে রাখা হয়েছে। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার। এদিকে তার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড সঠিক চিকিৎসা চলছে দাবি করলেও খালেদা জিয়ার পরিবার ও তার দলের দাবি প্রিজন সেলে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না ৭৩ বছর বয়সী এই নারী। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে কারামুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠাতে তার দলের নেতারা বারবার আহ্বান জানালেও তাতে কান দেয়নি সরকার। উচ্চ আদালতেও তার জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এবার তার পরিবার বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এ বিষয়ে সরকারের কোনও করণীয় নেই বলে মন্তব্য করলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। এরমধ্যেই সংক্ষুব্ধ পক্ষ হয়ে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর দিনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি চাইলেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. আকন্দ। প্রসঙ্গত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিন মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে তার ১৯৯৬ সালের মেয়াদটি ছিল স্বল্প সময়ের এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত।

Share.