রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় পেরিয়ে গেছে ১৯ বছর!

0

ঢাকা অফিস: আজ মঙ্গলবার ১৪ এপ্রিল ! রাজধানীর রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় পেরিয়ে গেছে ১৯ বছর। দীর্ঘদিন পর এই মামলাটির বিচারকাজ শেষ হতে যাচ্ছে। আদালতের কার্যক্রম শুরুর পর স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এই মামলার বিচারকাজ শেষ হবে বলে আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এর আদালতে মামলাটির বিচারকাজ চলছে। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট সাক্ষী ৮৪ জন। এর মধ্যে সবশেষ সাক্ষী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির তৎকালীন পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফের জবানবন্দির মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। করোনার কারণে ঘোষিত ছুটি শেষ হলে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ হবে। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে শেষ হবে এই মামলার বিচারকাজ। এরপর বিচারক এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঞার আশা আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে দ্রুতই শেষ হবে বিচারকাজ। আজ মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) তিনি বলেন, মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য বাকি আছে। আদালত বন্ধ না হলে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়ে যেতো। আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হবে বলে আমরা আশাবাদী। আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও চান মামলার কার্যক্রম দ্রুত শেষ হোক। আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, বিলম্বে হলেও এই মামলার বিচার শেষ হতে যাচ্ছে। আশা করছি, আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন। ২০০১ সালের পহেলা বৈশাখের দিন ভোরে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের ঘটনাস্থলে দুইটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি এবং ১০-১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই সাতজন প্রাণ হারান এবং ২০-২৫ জন আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরো তিন জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুইটি মামলা করেন। পরে ১৪ জনকে আসামি করে দুইটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ২৩ জুন। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। অন্য মামলায় মুফতি আব্দুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতোমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে। মামলায় সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ চার আসামি এখনো পলাতক। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আসামিদের আপিল হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে হওয়া মামলায় ২০০৯ সালে চার্জ গঠনের পর প্রথম সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণে ধীরগতি চলে আসে। তবে সম্প্রতি সাক্ষ্যগ্রহণে গতি আসায় বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে।

Share.