রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে ৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি

0

বাংলাদেশ থেকে কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি:    কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীতে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দশ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাদের বসতঘর পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ফলে দৌড়াদৌড়ি ও হুড়োহুড়িতে পড়ে হাজারও রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন। আগুনে সম্পূর্ণ বাড়ি ঘর পুড়ে যাওয়ায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা গৃহহারা। তবে আগুনে দগ্ধ হয়ে দুই  শিশুসহ এ পর্যন্ত ৭ জন রোহিঙ্গা মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। এঘটনায় ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প আজ সকালে পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা জানান, সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ৮ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন পার্শ্ববর্তী অন্য ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার আগেই আগুন একে একে ৮ নম্বর ওয়েস্ট ৮, ১০ সর্বশেষ ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ছড়িয়ে যায়।  খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কক্সবাজার, উখিয়া, রামু ও টেকনাফ থেকে ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এসময় দমকল বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী, পুলিশ, এপিবিএন এর সদস্য রেডক্রিসেন্টের টিম ও স্থানীয় গ্রামবাসী যোগ দেয়। সোমবার রাত ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আগুনে রোহিঙ্গাদের ১০ হাজারেও বেশি ঘর পুড়ে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এই সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। এছাড়াও পুড়ে গেছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিও অফিস ও পুলিশ ব্যারাক। অগ্নিকাণ্ডে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লাগোয়া বাংলাদেশি বাসিন্দাদের দুই শতাধিক বাড়ি ঘর পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমদ নিজাম উদ্দিন জানান, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তারা এখন গৃহহীন।  একইভাবে দুই শতাধিক বাংলাদেশি পরিবারের বসতবাড়ি পুড়ে গেছে। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন আজ সকালে জানান, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত দুই শিশুসহ ৭ জন রোহিঙ্গা অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছে। মৃতদেহগুলো একদম পুড়ে গেছে। উখিয়ার বালুখালী ৮নং এপিবিএন এর অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মোঃ শিহাব কায়সার জানিয়েছেন, ‘আগুনে বালুখালীতে অবস্থানরত ৪নং এপিবিএনের ব্যারাক আংশিক পুড়ে গেছে। তবে অস্ত্র ও মূল্যবান আসবাবপত্র নিরাপদে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আগুনে রোহিঙ্গাদের ঝুঁপড়ি ঘর ছাড়াও বেশকিছু এনজিও অফিস, স্কুল-মাদরাসা পুড়ে গেছে। উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন জানান, আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এখনও তেমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে গিয়ে রোহিঙ্গাদের কাছে জানতে চাইলে তারাও নানা তথ্য দিয়েছে। এমনকি রোহিঙ্গারাই একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেছে। তদন্তে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Share.