শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-ভাঙচুর, পুলিশের গুলি

0

ঢাকা অফিস: মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেনের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তবে বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, প্রবেশপত্র ও সনদ বিতরণের সময় টাকা নেওয়া, নিয়োগে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদ্যাত্যাগের দাবি জানায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এর আগে গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকালে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা। ওই সময় বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় সোমবার বিকেলে ফের আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনায় বসেন শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসাদুজ্জামানসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। এসময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে স্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিক্ষোভ শুরু করে। পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হঠাৎ করেই শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে উঠে। তারা ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলিবর্ষণ করেন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে শিবচর থানার একটি সূত্র জানায়। শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ে যান। সেখানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকে অবরুদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান জানান, ৩ দিন যাবৎ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু আজ বাংলাদেশ সময় বিকেলে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে নিয়ে এলাকায় যাই। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সমোঝতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রশাসনের আশ্বাস মেনে নেয়নি। পরে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠি চার্জসহ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

Share.