শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে

0

স্পোর্টস রিপোর্ট: এশিয়া কাপের সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে পাকিস্তান। বুধবার চরম নাটকীয়তাপূর্ণ ম্যাচে শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে নাসিম শাহের টানা দুই ছক্কার সৌজন্যে চার বল হাতে রেখেই বাবর আজমের দল ১ উইকেটে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়েছে আফগানিস্তানকে। সেইসঙ্গে আবারও এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত এই টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে পাকিস্তান। রবিবার শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। যারা আগেই দুই ম্যাচ জিতে ফাইনালের পথে একপা দিয়ে রেখেছিল। বুধবার পাকিস্তানের কাছে হারায় আফগানিস্তানের সঙ্গে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তির দেশ ভারতেরও। বুধবার টসে জিতে প্রথমে আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান আসে হযরতউল্লাহ যাযাইয়ের ব্যাট থেকে। এছাড়া রহমানউল্লাহ গুরবাজ ১৭, করিম জানাত ১৫ এবং ১০ রান করেন নজিবুল্লাহ জাদরান। রশিদ খান ১৮ আর আজমতউল্লাহ ওমারজাই ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভার বল করে ২৬ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট লাভ করেন হারিস রউফ। এছাড়া নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ নেওয়াজ এবং শাদাব খান প্রত্যেকেই ১টি করে উইকেট লাভ করেন। আফগানিস্তানের ছুড়ে দেয়া ১৩০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামলে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ব্যক্তিগত শূন্য রানেই সাজঘরে ফিরে যান পাক অধিনায়ক বাবর আজম। দলীয় ১৮ রানে আউট হয়ে যান ফখর জামানও। তথাপি মোহাম্মদ রিজওয়ান (২০), ইফতিখার আহমেদ (৩০) এবং শাদাব খান (৩৬) পাকিস্তানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু লো স্কোরিং ম্যাচেও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। শুধু তাই নয়? স্লগ ওভারে অসাধারণ বোলিং আফগানিস্তানের জয়ের পরিস্থিতিও তৈরি হয়। কিন্তু সেই জয়ই অবিশ্বাস্যভাবে ছিনিয়ে নেয় বাবর আজমের দল। ১৮তম ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়েই জোড়া উইকেট তুলে নেন আফগানিস্তানের বাঁহাতি পেসার ফজলহক ফারুকি। পাকিস্তানের আশা জিইয়ে থাকে তখন আসিফ আলিতে। ১৯তম ওভারে আর এক বাঁহাতি পেসার ফারিদ আহমেদ ফেরান সেই আসিফ আলিকেও। তখনও ৭ বলে ১২ রান প্রয়োজন পাকিস্তানের। হাতে মাত্র ১ উইকেট। শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১ রান। বল হাতে ফারুকি। প্রথম ডেলিভারিই ফুলটস। ছয় মারেন নাসিম শাহ। পরের বলটিও ফুলটস। আবারও নাসিম শাহের ছক্কা! জোড়া ছক্কার সৌজন্যে পাকিস্তানের স্কোর দাড়ায় ৯ উইকেটে ১৩১। প্রায় হারতে যাওয়া ম্যাচেই পাকিস্তানকে ১ উইকেটে জিতিয়ে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন নাসিম শাহ। আফগানদের হয়ে ৩টি করে উইকেট লাভ করেন ফজলহক ফারুকি এবং ফারিদ আহমেদ। এছাড়া রশিদ খান নেন বাকি ২ উইকেট। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন শাদাব খান। এশিয়া কাপে টিকে থাকার জন্য এই ম্যাচে ভারতের জন্য ছিল জটিল সমীকরণ। প্রথমত আফগানিস্তানের জয়। এরপর ভারতকে বড় ব্যবধানে জিততে হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছেও হারতে হবে পাকিস্তানকে। কিন্তু আফগানদের হারের পর আর কোন অঙ্কই রইল না। পাকিস্তানের জয়ে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো ভারতেরও। এর ফলে শেষ দুটি ম্যাচ শুধুই নিয়ম রক্ষার হয়ে দাঁড়াল।

Share.