সালমান স্মরণে শিল্পী সমিতির বিশেষ দোয়া

0

বিনোদন ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ। যিনি মরেও তাঁর কোটি কোটি ভক্তদের মনে অমর হয়ে আছেন। শুধু দর্শক নয়, মৃত্যুর দুই যুগ পর এখনো সালমান শাহর অভাব অনুভব করেন বাংলা পিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেক পরিচালক-প্রযোজক এবং অভিনয়শিল্পীরাও। যারা সালমানের সঙ্গে কাজ করেছে তারাও, যারা করেননি তারাও। তাইতো প্রতি বছর অমর নায়কের জন্ম বা মৃত্যু দিন এলেই তার স্মরণে কোনো না কোনো আয়োজন থাকেই।সেই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার আসরের নামাজের পর প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে তার রুহের মাগফেরাত কামনায় এফডিসিতে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অভিনেতা জায়েদ খান নিজের ফেসবুক পেজে একটি ব্যানার শেয়ার করে এই খবর জানান। সালমান শাহকে উদ্দেশ্য করে সেখানে জায়েদ ক্যাপশন দিয়েছেন, অকালে হারিয়ে যাওয়া একটি নক্ষত্র।ব্যানার থেকে জানা যায়, রবিবার আসরের নামাজ বাদে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আর্টিস্ট স্টাডি রুমে সালমান শাহ স্মরণে ওই বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে সংগঠনটির সদস্যারা ছাড়াও অন্যরা উপস্থিত থাকবেন। এ প্রসঙ্গে জায়েদ খান বলেন,সালমান শাহ আমাদের ইন্ডাস্ট্রির কিংবদন্তি নায়কদের একজন। আমিও তার ভক্ত। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদান চির স্মরণীয়। তাই দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই সালমান ভাইয়ের মাগফেরাত কমানায় ছোট একটি দোয়ার আয়োজন করেছে শিল্পী সমিতি।

১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর জন্ম হয়েছিল সিলেটে। তার প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। কিন্তু পর্দায় তিনি সালমান শাহ নামেই পরিচিত ছিলেন। অমর এই নায়কের অভিনয়ে অভিষেক হয়েছিল ১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে। এর পরের ইতিহাস তো সবারই জানান। সালমান যা করেনই সেটাই হিট। তার সঙ্গে চিত্রনায়িকা শাবনূর এবং মৌসুমীর জুটি ছিল সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়। মাত্র চার বছরে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রকে যা দিয়েছেন, তা সত্যিই অকল্পনীয়। কিন্তু দেশের সর্বকালের সেরা এই নক্ষত্রটিরই পতন হয় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। এদিন সালমান শাহর ঝুলন্ত দেহ তার শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা নায়ককে মৃত ঘোষণা করেন। সেসময় ‘মন মানে মানে’, ‘কে অপরাধী’, ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘প্রেমের বাজি’সহ কয়েকটি ছবির কাজ করছিলেন। সেগুলোর কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে যান না ফেরার দেশে। এর মধ্যে ‘মন মানে না’ ছবিটি পরবর্তীকে রিয়াজকে দিয়ে করানো হয়।

নব্বইয়ের দশকে সালমান শাহ এতটাই জনপ্রিয় ছিলেন যে, তার কথা বলা, পোশাক ও চুলের কাটিংয়ের নানা স্টাইল যুবকরা অনুসরণ করতেন। পরিচালক-প্রযোজকরা সমানে দৌঁড়াতেন সালমানের পেছনে। ওই সময় সালমানের সঙ্গে জুটি বেঁধে কয়েকজন নায়িকাও হিট হয়ে যান। তাদের মধ্যে শাবনূর ও মৌসুমী অন্যতম। সালমান-শাবনূর জুটি তো ঢালিউডের ইতিহাসে সেরা। বলিউডে যেমন শাহরুখ-কাজল। অন্যদিকে মৌসুমী সালমানের প্রথম ছবির নায়িকা। তার সঙ্গেও একাধিক হিট ছবি রয়েছে সালমানের।১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এমন একজন নায়কের মৃত্যুর পর ঢালিউডের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল। প্রিয় নায়ককে হারানোর শোক সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন- এমন ঘটনাও ঘটেছিল সেসময়। যদিও স্বয়ং সালমানের মৃত্যু নিয়ে রয়েছে ধোয়াসা। যা আজও কাটেনি। ডাক্তারি রিপোর্ট অনুযায়ী অভিনেতা আত্মহত্যা করেছেন বলা হলেও তার পরিবারের দাবি, সালমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল।অভিযোগের আঙুল উঠে তার স্ত্রী সামিরার দিকে। কিন্তু দুই যুগেও উদঘাটিত হয়নি অমর নায়কের মৃত্যু-রহস্য।

Share.