সৌদি-আমিরাতে অস্ত্র রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত দক্ষিণ আফ্রিকার

0

ডেস্ক রিপোর্ট: সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশ দুটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত ইয়েমেনের কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অস্ত্র সরবরাহ করছে; এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রিটোরিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার সমরাস্ত্র কেনার অন্যতম শর্ত হচ্ছে, দেশটির কাছ থেকে কেনা অস্ত্র তৃতীয় কোনও পক্ষের কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার জানিয়েছে রয়টার্স। গত ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে, সংযুক্ত আরব আমিরাত পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করা সমরাস্ত্র ইয়েমেনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত মিলিশিয়াদের কাছে হস্তান্তর করছে। একইমাসে সিএনএনের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সৌদি আরবের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগের সত্যতা মেলে। রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে অস্ত্র আমদানি করা দেশগুলোকে তাদের অস্ত্রভাণ্ডার পরিদর্শন করতে দেওয়ার শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়। দেশটির অস্ত্র পরিদর্শকরা ক্রেতা দেশগুলো সফরে গিয়ে চুক্তির শর্তগুলো ঠিকমতো পালন হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করেন। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এমন চুক্তিতে স্বাক্ষর করা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার পরিদর্শকদের নিজ নিজ দেশে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছিল না। সৌদি-আমিরাতে অস্ত্র রফতানি বন্ধের বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার একাধিক সমরাস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। ডেনেল এবং রাইনমেটাল ডেনেল মিউনিশন (আরডিএম)-এর মতো প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বিতর্কে সৌদি-আমিরাতে তাদের রফতানি স্থগিত হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমরাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক এজরা জেলে বলেছেন, তার দেশ সমরাস্ত্র রফতানির সময় মানবাধিকার রক্ষা, আঞ্চলিক সংঘাত, তৃতীয় পক্ষের হাতে অস্ত্র চলে যাওয়া, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে। রাইনমেটাল ডেনেল মিউনিশন জানিয়েছে, গত মার্চ থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে তাদের কিছু রফতানি কার্যক্রমের অনুমতি মিলছে না। ২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী সানা দখলে নেয় দেশটির ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন ক্ষমতাচ্যুত হাদি। হুথির ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামের সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সৌদি-আমিরাতের সামরিক জোট। স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল, জানাজার নামাজসহ বিভিন্ন স্থানে সৌদি জোটের বিমান হামলায় নিহত হয় লক্ষাধিক বেসামরিক মানুষ। আহত হয় আরও অনেকে। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছায় ইয়েমেন। সূত্র: রয়টার্স, পার্স টুডে।

Share.