স্কুল ছাড়তে হয়েছে ছাত্রীকে, ক্লাস নিচ্ছেন অভিযুক্ত শিক্ষক

0

ঢাকা অফিস: বিশ্বকাপ ফুটবল চলার সময়, ২০১৮ সালের অক্টোবরে, ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ ওঠে নওগাঁ সদর সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এরপর তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলেও পরবর্তীতে ফের নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার অনুমতি পান তিনি। তবে স্কুল ছাড়তে হয়েছে অভিযোগকারী ছাত্রীকে। জানা যায়, সমঝোতার নামে ছাত্রীকে নওগাঁ সদর সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুল থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) এবং শিক্ষককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেন জানান, বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে খেলার বিষয়ে জানতে ছাত্রীকে বেশি রাতে ফোন দিয়েছিলেন তিনি। অব্যাহতির প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনার জন্য আমাকে স্কুল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। বেতন-ভাতাও বন্ধ ছিল। তবে কমিটির কাছে আবেদন করলে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় বেতন-ভাতা পাচ্ছি।’ এ ব্যাপারে সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মহাতাফ হোসেন বলেন, ‘অভিযোগের কারণে শিক্ষক বেলাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। তবে পরে ম্যানিজিং কমিটি তাকে মাফ করে দেয়।’ অভিযোগকারী ছাত্রীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিভাবকের ইচ্ছায় ওই ছাত্রীকে টিসি দেওয়া হয়েছে।’ ঘটনার ব্যাপারে স্কুলের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি মো. জহুরুল বলেন, ‘ঘটনার জন্য শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তারাও (ছাত্রীর অভিভাবক) কথা বলে ব্যাপরটা মিটিয়ে নিয়েছে। অনেক দিন আগের ঘটনা, সেখানেই শেষ হয়ে গিয়েছে।’ এদিকে মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেন এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে উত্ত্যক্ত করেন। এই ঘটনায় ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হয়। জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযোগকারী ছাত্রীকে টিসি দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে অভিযোগ করেন ছাত্রীর অভিভাবক। অভিযোগের পর কমিশন শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠায়। মানবাধিকার কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়। উপসাচিব আনেয়ারুল হকের সই করা চিঠিতে সাত কার্যদিসের মধ্যে মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

Share.