২৩ বছর পর যুবকের মাথা থেকে গুলি বের করেল কলকাতার চিকিৎসকরা

0

ডেস্ক রিপোর্ট: পারিবারিক অশান্তির জেরে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল ১৮ বছরের কিশোর। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু গুলি বার করার জন্য অস্ত্রোপচার করতে রাজি ছিলেন না তার মা। তখন সে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে ওই কিশোর চল্লিশ বছরের যুবক। পেশায় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। দীর্ঘ ২৩ বছর পর সম্প্রতি তার কথা জড়িয়ে যাচ্ছিল। আর এর নেপথ্যে মাথায় আটকে থাকা গুলিটি। অবশেষে সেই গুলিটি বের করেন কলকাতার ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসকরা। মালদহের বাসিন্দা ওই স্কুলশিক্ষক জানান, ঘটনাটি ১৯৯৯ সালের। তিনি মাসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতেন। মাধ্যমিকের শেষে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। একদিন চাচার ঘরে টিভি দেখতে গিয়েছিলেন। সেই সময় খুড়তুতো দাদা আচমকাই তার বাঁ কানের উপরের অংশে বন্দুক ধরে এবং কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রিগার টিপে দেয়। পরে গুলিবিদ্ধ ওই স্কুলশিক্ষককে এসএসকেএম হাসপাতালে নেওয়া হয়।  চিকিৎসক ভগবতীচরণ মোহান্তি বলেন, সে সময় ওই স্কুলশিক্ষকের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল। বুলেটটি ঢোকার দিকে ক্ষত থাকলেও বেরোনোর চিহ্ন ছিল না। মস্তিষ্কের স্নায়ুর পেছন দিকে আটকে ছিল গুলিটি। স্নায়ু যে পর্দায় আচ্ছাদিত থাকে, সেটি ভেদ করে ঢুকেছিল গুলিটি। সবাই ভেবেছিলাম ছেলেটি হয়তো আর বাঁচবে না। কিন্তু কয়েক দিন পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। কাউকে ভালো মতো চিনতে পারত না।  তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধর ঘটনা থেকে এখন পর্যন্ত আমিই তার চিকিৎসা করেছি। ২০০৬ সালে ওই যুবক প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান। ২০১২ সালে তার বিয়ে হয়। গুলিবিদ্ধ স্কুলশিক্ষকের স্ত্রী বলেন, বিয়ের সময়ে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছিল। প্রথমে আমি ভয় পেয়েছিলাম। তখন আমার বাবা-মা বোঝান, বিয়ের পরেও তো কোনো কিছু ঘটতেই পারে। সেখানে তিনি সুস্থই রয়েছেন। বর্তমানে আমাদের এক ময়ে রয়েছে। মাঝেমধ্যেই আমার স্বামীর খিঁচুনির সমস্যা হত। বিয়ের আগে পুরো ভালো ছিলেন দিনি। হঠাৎ আবার সমস্যা শুরু হয়েছিল। গুলিবিদ্ধ স্কুলশিক্ষক জানান, মাসখানেক আগে আচমকাই দেখা যায়, তার কথা বলার সময়ে জড়তা হচ্ছে। মাথার পিছন দিকে ব্যথাও হচ্ছে। বিষয়টি চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন, ২৩ বছর আগের বুলেটটি যেখানে আটকে ছিল, এখনও সেখানেই আটকে রয়েছে। তখনই অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন তিনি। ২০২১ সালে তার মা মারা যায়। এখন আর বাধা দেওয়ার কেউ না থাকায় তিনি অস্ত্রোপচারে রাজি হয়ে যান।

Share.