কোরবানি ঈদের খাওয়া ও স্বাস্থ্য সচেতনতা

0

লাইফস্টাইল ডেস্ক: ঈদ মানে আনন্দ। আর সেটা যদি কোরবানির ঈদ হয় তাহলে তো কথাই নেই। তবে বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে এবার কোরবানি ঈদের আমেজ একটু ভিন্ন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে করোনা কালেও ঈদকে আনন্দময় করে তোলা যায়। দুই ঈদের মধ্যে কোরবানির ঈদে খাদ্য সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কারণ কোরবানির ঈদের খাদ্য তালিকায় থাকে সব ভারী খাবার. ।

  কুনাফা ও চিকেন মোমো  চলুন কোরবানির ঈদের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জেনে নিই- 

  • ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে অল্প করে সেমাই, পায়েস বা ফিরনি খেতে পারেন। সাথে কোনো একটি সিজনাল ফল (যেমন- আম, পেয়ারা, ডাব, কলা ইত্যাদি) বাদাম বা খেজুর খেতে পারেন। খাবার আধঘণ্টা পরে দেড় থেকে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নামাজ পড়তে যান।
  • দুপুরে সাদা ভাতের সাথে মাছের একটি আইটেম রাখতে পারেন। যেহেতু সারাদিনের খাদ্য তালিকায় আর মাছ থাকছে না, তাই সাথে সবজি রাখতে পারেন। কারণ ঈদের ভারী খাবারের ভীড়ে আশঁজাতীয় খাদ্যের পরিমাণ কমে যায়। এতে করে সারাদিনের সবজির চাহিদাও মেটে।
  • যেহেতু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেই সবাই মাংস খাওয়ার জন্য বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাই সকাল আর দুপুরের খাওয়াটা খুব কম রাখাই ভালো। পোলাও, বিরিয়ানি, ভাজা-পোড়া ও অন্যান্য ভারী খাবার যথাসম্ভব কম খেয়ে পেটটা একটু খালি রাখুন।
  • রাতে মাংসের তৈরি আইটেমই থাকে সবার ঘরে। সাথে সালাদ, টকদই, বোরহানি রাখা যেতে পারে। এগুলো খাবার হজমে সাহায্য করে। সাথে প্রচুর পানি পান করতে হবে। খাওয়ার পর সাথে সাথেই শুয়ে পড়বেন না। খাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা পর ঘুমোতে যান।

আপেল কাবাব ও পটেডুলস গরুর কালা ভুনা সাবধানতা

অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু গরু নয়, মহিষ, ছাগল ও খাসির মাংসে থাকে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও ফ্যাট, তাই অতিরিক্ত  মাংস খেলে স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, চর্বি ও কোলেস্টেরল মাত্রা বেড়ে যায়, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই এসব রোগে ভুগছেন তাদের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি। তাই মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রেখে পরিমিত পরিমাণে এবং চর্বি ছাড়িয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে  হবে। যাদের পাকস্থলীতে আলসার রয়েছে তারা লাল মাংস খেলে তাদের আরও বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে, কাজেই সাবধান থাকা জরুরি । কিডনির রোগী বিশেষ করে ফেইলর ও ডায়ালাইসিস করা রোগীদের ক্ষেত্রে উচ্চ মাত্রার প্রোটিনে নিষেধাজ্ঞা থাকে। অবশ্যই যারা এই রোগগুলোর ভিতর দিয়ে যাচ্ছেন ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ ছাড়া গরুর মাংস খাবেন না। যাদের অপারেশন হয়েছে বা শরীরের কোনো  ক্ষত রয়েছে, তারা খুব সীমিত পরিমাণে মাংস খাবেন। বাতের রোগী, ইউরিক এসিডের আধিক্যে যারা ভুগছেন তাদের লাল মাংস না খাওয়া ভালো।  লিভারের রোগীরা গরুর মাংস খাওয়ার আগে ডক্টর বা ডায়টেশিয়ানের সাথে অবশ্যই কথা বলে নেবেন। যাদের  হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ আছে এবং যারা  স্ট্রোকের ঝুঁকিতে আছেন তাদের জন্য লাল মাংস এড়িয়ে যাওয়া ভালো।

মনে রাখবেন গরুর মাংস খাওয়ার সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি আর পানিযুক্ত সবজি, শাক, সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।  সুস্থ মানুষের একদিনে ৮৫-৯০ গ্রাম গরু মাংস খাওয়া উচিত, যা থেকে ১৫০ ক্যালরি পাওয়া যাবে।  কোরবানি ঈদে অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি মাংস খাওয়া হয় বলে অনেকেই ভারী হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ঈদের সময় বা পরে ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন। প্রতিদিন সময় করে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন। মাংস খেতে ভালো লাগে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে যতই ভালো লাগুক না কেনো সব খাবারের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। এটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, যতটা সম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।

Share.