ঢাকা অফিস: রংপুর বিভাগের আট জেলায় দায়িত্বরত ৫৮ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিরাপত্তায় ১০ জন করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। ইউএনওদের নিরাপত্তায় আজ শুক্রবার সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন তাঁরা।দুর্বৃত্তের হামলায় দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম গুরুতর আহত হওয়ার পর সরকার রংপুর বিভাগের সব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রংপুর রেঞ্জ পরিচালক একেএম জিয়াউল আলম বিভাগের আট জেলার কমান্ড্যান্টকে একটি নির্দেশনা পাঠান। এতে প্রত্যেক ইউএনওর জন্য ১০ জন করে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়।ওই নির্দেশের পর রংপুর বিভাগের রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার ৫৮টি উপজেলার ইউএনওদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আনসার বাহিনীর একজন পিসি, একজন এপিসি ও আটজন সদস্যসহ মোট দশ জন করে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়।এদিকে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচার গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সম্পন্ন হয়েছে। তাঁকে বর্তমানে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত হননি। তবে, তাঁর সেরে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের চিকিৎসকরা।ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরোসার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে অস্ত্রোপচার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ছয় সদস্যের চিকিৎসক দল ইউএনও ওয়াহিদার মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন।নিউরো সার্জন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাঁর (ওয়াহিদা খানম) মাথায় ভাঙা হাড়ের সাত-আটটা টুকরা ছিল। সেগুলো আমরা জোড়া দিয়েছি। জোড়া দিয়ে হাড়গুলোকে জায়গা মতো বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি যে আরো ছোট ছোট কাটা ছিল, সেগুলোও জোড়া দিয়েছি।’গত বুধবার রাত আড়াইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করে। তারা বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় ইউএনওর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাঁকেও আঘাতে জখম করে। পরে কোয়ার্টারের অন্য বাসিন্দারা তাদের চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় আনা হয়। তাঁর বাবা রংপুরে চিকিৎসাধীন।ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলী শেখকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ দল। আজ শুক্রবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরে। এর আগে এ ঘটনায় অপর একজনসহ সন্দেহভাজন হিসেবে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়।
৫৮ ইউএনওর নিরাপত্তায় ১০ জন করে আনসার মোতায়েন
0
Share.