নিম্নচাপে বাড়তে পারে সবজির দাম

0

ঢাকা: হঠাৎ বেড়ে যাওয়া আলুর দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে নতুন করে দাম না বাড়লেও আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে আরো বাড়তে পারে সবজির দাম। তবে একশ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটি ও শসার দাম কিছুটা কমে এসেছে। পেঁপে ছাড়া সব সবজি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০ টাকার ওপরে। তবে গত দুদিন বৃষ্টির কারণে নাগালের বাইরে থাকা সবজির বাজার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সরবরাহ কমসহ নানা অজুহাত দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তিন দিনের ব্যবধানে রাজধানীর পাইকারি বাজারে আলুর দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৫ টাকায়। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে আলুর দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে এলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে শাকসবজির দাম। রাজধানী কারওয়ান বাজারের পাইকারি আলু ব্যবসায়ী মো. আলী বলেন, বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা। এ ছাড়া মান অনুযায়ী আলু ৩০ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোল্ডস্টোরেজগুলো এখন আলু ছাড়ছে। বাজারে সরবরাহ বেড়েছে, এটা অব্যাহত থাকলে সামনে দাম আরো কমবে। যাত্রাবাড়ী এলাকার ব্যবসায়ী রহিম মিয়া বলেন, ‘আলুর দাম কমেছে। আলু বিক্রি করছি ৪২ টাকায়। বাছাই আলু বিক্রি করছে হচ্ছে ৪৪ টাকায়। যেহেতু পাইকারি বাজারে দাম কমছে, দু-একদিনে খুচরা বাজারে দাম আরো কমবে।’ তবে নিম্নচাপের কারণে শাকসবজির দাম আরো বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানান রহিম মিয়া। এদিকে আলুর দাম কমলেও স্বাভাবিক হচ্ছে না রাজধানীর কাঁচাবাজার। বেশির ভাগ সবজির দাম ১০০ টাকার ওপরে। সেঞ্চুরি করেছে প্রায় আধা ডজন শাকসবজি। কোনোটির দাম ৭০, কোনোটি ৮০, আবার কোনোটি ৯০ টাকা। সবজির এমন চড়া বাজারে নতুন করে দাম বেড়েছে ডিম ও কাঁচামরিচের। ৪০ থেকে ৫০ টাকা পোয়া (২৫০) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। অর্থাৎ কেজিতে কাঁচামরিচের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে শিম, পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, বরবটির সঙ্গে নতুন করে ১০০ টাকা কেজির তালিকায় নাম লিখিয়েছে উস্তা। এর মধ্যে পাকা টমেটো গত কয়েক মাসের মতো এখনো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা এবং গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। আর উস্তের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে। বরবটির কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। বেগুনও গত সপ্তাহের মতো ৮০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শুধু এসব সবজি নয়, বাজারে অন্য সবজিগুলোও স্বস্তি দিচ্ছে না। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঝিঙা, কাঁকরোল, ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। বাজারে নতুন আসা ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে মুলা ও পেঁপে। এর মধ্যে মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৫০ টাকা। এদিকে স্বস্তি মিলছে না পেঁয়াজের দামেও। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা বড় আকারের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। গত মাসে ভারত রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের বিষয়ে রবিউল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে এসে মোটেও শান্তি পাই না। সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। ১০০ টাকার সবজি দিয়ে একবেলাও হয় না। সবজির এত দাম আমার ৫০ বছরের জীবনে আর দেখিনি।’রবিউল ইসলাম আরো বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই সবজির দাম চড়া। এর মধ্যেই তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজ, ডিমের দাম বেড়ে গেল। আগে কখনো পুরাতন আলুর কেজি ৪০ টাকা কিনে খাইনি। এখন পুরাতন আলুর কেজি ৪৫ টাকা কিনে খেতে হচ্ছে। এক পোয়া কাঁচামরিচ কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকা দিয়ে। ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম এমন হলে আমরা চলব কীভাবে?’

Share.