এই তীব্র গরমে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কিভাবে?

0

লাইফস্টাইল ডেস্ক:  হঠাৎ করেই গরমের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিষ্ঠ জনজীবন। সপ্তাহ খানেক ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র দাবদাহ চলছে। এর মধ্যেই দেশে গত ২৬ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় গত ২৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। চলতি এপ্রিলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১-২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রার সূচক থেকে জানা গেছে এ তথ্য।হঠাৎ করেই প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই সময় সতর্ক না হলে পানিশূন্যতা-বদহজম কিংবা হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পরিস্থিতিতে সবার স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রাখা উচিত। এবার তাহলে বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী গরমে সুস্থ থাকার উপায়গুলো তুলে ধরা হলো।তীব্র গরমে সুস্থ থাকার উপায় :

তাপ ব্যবস্থাপনা :সাধারণত মানুষের শরীরে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। এর জন্য শীতল তাপমাত্রা হচ্ছে ২০-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। এতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ যদি ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে তাহলে শরীরের সহ্যসীমার মধ্যে থাকে। এই তাপমাত্রা ও বাতাসে আর্দ্রতা পরিমাণের থেকে বেশি হলে তখন শরীর তা সহ্য করতে পারে না। ঠিক তখনই অস্বস্তিসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তখন মানুষের মধ্যে হিটস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই গরমের সময় তাপ ব্যবস্থাপনাই মূল কাজ। এই সময় গরম কিভাবে কম লাগবে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।পানি ও পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ :গরমের সময় পানিশূন্যতা রোধে প্রচুর পরিমাণ পানি এবং পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হয়। পানি, স্যালাইন, ফলমূলের রস, শরবত ও ডাব ইত্যাদির পানীয় শরীরে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা যোগায়। এছাড়াও পানিজাতীয় সবজি-ফলমূল খাওয়া যেতে পারে। যেমন তরমুজ, আনারস, জাম্বুরা, আপেল। সবজি বেশি খাওয়ার ফলে পরিপাকক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। এতে করে শরীরের অস্বস্তি হ্রাস পায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানিশূন্যতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, পানিশূন্যতার জন্য স্ট্রোক পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকা :দিনের যেই সময় তাপমাত্রা বেশি থাকে তখন সরাসরি রোদে না যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কাজ থেকে বিরত থাকা ভালো। আমাদের দেশে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সূর্যের তাপমাত্রা প্রখর থাকে। এ সময় সূর্যের আলোয় যেতে হলে ছাতা, টুপি ও পায় জুতা ব্যবহার করা উচিত। আর চোখকে ভালো রাখার জন্য সানগ্লাস ব্যবহার করুন এবং সঙ্গে অবশ্যই পানির বোতল রাখবেন।ভাজা-পোড়া এবং জাঙ্ক ফুডকে ‘না’ বলুন :প্রচণ্ড গরমে ভাজা-পোড়া কিংবা জাঙ্ক ফুড জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। এ জাতীয় খাবার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে দেয়। এছাড়াও ক্যালোরি, সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে। এসব খাবারে শরীরে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার পাশাপাশি বদহজমের আশঙ্কাও থাকে।

বাসস্থানের জায়গা ঠান্ডা রাখা :বাসস্থানের জায়গা বা ঘর যেন ঠান্ডা থাকে তার জন্য ঘরে বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। দিনের বেলায় ঘরে আলো কম থাকলে সমস্যা নেই, এতে বরং ঘর ঠান্ডা থাকবে। ঘরের ভেতর গাছ থাকলে আরও ভালো। গাছ তাপ শুষে নেয়। ঘরের মেঝে যদি পাকা থাকে তাহলে কিছুক্ষণ পরপর মুছে নিন, এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে।এছাড়াও তীব্র গরমে যদি কারো শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম-ভাব হয় কিংবা হঠাৎ করেই মাথা ঘুরে পড়ে যায় তাহলে বিলম্ব না করে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Share.