রবিবার, নভেম্বর ২৪

অন্য দেশ পুনর্গঠনে সেনা মোতায়েনের যুগের অবসান: বাইডেন

0

ডেস্ক রিপোর্ট:  দুদশকের লড়াইয়ের পর আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধ বন্ধে নিজের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, অন্য দেশকে গড়তে বিপুল মার্কিন সেনা মোতায়েনের যুগের অবসান হয়েছে।২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার ২০ বছর পূর্তির এগারো দিন আগে এমন বক্তব্য দিয়েছেন জো বাইডেন। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, আমার আমেরিকার নাগরিকদের বলছি, আফগান যুদ্ধের অবসান হয়েছে। যুদ্ধ কখন বন্ধ হবে; কিংবা আদৌ বন্ধ হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হওয়া চতুর্থ প্রেসিডেন্ট আমি। যখন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়ছিলাম, তখন অঙ্গীকার করেছিলাম—আমি যুদ্ধের ইতি টানব।আজ আমি সেই অঙ্গীকারের প্রতি সম্মান দেখিয়েছি বলে মন্তব্য করেন ডেমোক্র্যাটদলীয় এই প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এখন আমেরিকানদের সঙ্গে সততা দেখানোর সময়। আফগানিস্তানে আমাদের অনন্তকালীন মিশনের কোনো পরিকল্পনা নেই। জো বাইডেন বলেন, আফগানিস্তানের যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়টি কেবল ওই দেশটিকে নিয়েই না, অন্য কোনো দেশকে পুনর্গঠনে বড় ধরনের মার্কিন সামরিক অভিযানের যুগের ইতি টানারও বিষয়। ৯/১১ হামলার পর মার্কিন আগ্রাসনে তালেবান সরকারের উৎখাত হয়েছিল। দুদশক পর সেই তালেবানের হাতেই আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ চলে যায়।
এদিকে তালেবানের শাসন থেকে বাঁচতে আফগানিস্তানে পলায়নপর নাগরিকেরা সীমান্তে গিয়ে জড়ো হয়েছেন। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) স্থলবেষ্টিত দেশটির সীমান্তে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ তালেবান নেওয়ার পর বিদেশি সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় এক ধরনের প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। কীভাবে এই মানবিক সংকট মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সোমবার আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর প্রত্যাহার শেষ হয়েছে। এরপর তালেবান যোদ্ধারা মূলত ব্যাংক, হাসপাতাল ও সরকারি প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখতে উদ্যোগী হয়েছেন। দেশটিতে মার্কিন আগ্রাসনের সময়ে বিদেশি বাহিনীকে সহায়তা করা আফগানরা তালেবানের শাসনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বিদেশি বাহিনী চলে যাওয়ার পর কাবুল বিমানবন্দরের কার্যক্রম পরিচালনা এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইরান, পাকিস্তান ও মধ্য-এশীয় দেশগুলো হয়ে ব্যক্তিগতভাবে দেশ ছাড়তে উদ্যোগী হয়েছেন আতঙ্কিত আফগানরা। খাইবার পাসের পূর্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সবচেয়ে বড় সীমান্ত ক্রোসিং তোর্কহাম। সেখানকার এক পাকিস্তানি কর্মকর্তা বলেন, আফগান অংশে সারি সারি মানুষ দেখা গেছে। তারা ফটক খোলার অপেক্ষায় আছেন।
আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যকার ইসলাম কলয়া সীমান্ত ফাঁড়িতে কয়েক হাজার মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সীমান্ত দিয়ে ইরানে ঢুকে পড়া আটজনের একটি দলের এক সদস্য বলেন, অতীতের চেয়ে সীমান্ত শিথিল করে দিয়েছে ইরান। যারা ইরানে ঢুকতে চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য ইরানি নিরাপত্তা বাহিনীকে খুব একটা কঠোর হতে দেখা যায়নি। মধ্য-আগস্টে তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ফ্লাইটে এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি আফগানকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন নিজ দেশে পড়ে থাকা লাখো আফগান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

Share.