ডেস্ক রিপোর্ট: দশ লাখের বেশি শ্রমিক সংকটের কারণে বহু বিদেশি বিনিয়োগ ও অর্ডার বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে মালয়েশিয়ার বহু কোম্পানি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মালয়েশিয়ার আয়ের এক-চতুর্থাংশ আসে শিল্প খাতের উৎপাদন থেকে। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক সংকটের কারণে এসব শিল্প কারখানার উৎপাদন থমকে আছে। কারখানার মালিকরা শঙ্কায় আছেন, এভাবে ক্রেতা ফেরাতে হলে ভবিষ্যতে তারা হয়ত মালয়েশিয়ায় ফিরবেন না। সাড়ে তিন হাজারের বেশি কোম্পানির প্রতিনিধিত্বকারী ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের সভাপতি সোহ থিয়ান লাই বলেন, ‘‘গত কিছুদিনে আশা জাগানোর মত অনেক বিষয় আছে, আমাদের বিক্রিও বাড়ছে। কিন্তু আমাদের অনেক কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে গেছে।’’ বিশেষ করে পাম তেল কোম্পানিগুলো খাদ্যের কিনারে পৌঁছে গেছে বলে জানান ইউনাইটেড প্ল্যান্টেশনের প্রধান নির্বাহী পরিচালক কার্ল বেক-নিলসন। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি খুব খারাপ। বিষয়টা অনেকটা এরকম, আপনাকে ১১ জনের বিরুদ্ধে ফুটবল খেলতে হবে, কিন্তু আপনার দলে মাঠে নামার মত আছে কেবল সাতজন।’’ বর্তমানে মালয়েশিয়ার কারখানাগুলোতে অন্তত ৬ লাখ শ্রমিক দরকার। নির্মাণ শিল্পে সাড়ে ৫ লাখ, পাম তেল শিল্পে এক লাখ ২০ হাজার, চিপ উৎপাদন শিল্পে ১৫ হাজার কর্মী প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী চিপের ঘাটতি থাকার পরও মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো এগুলোর যোগান দিতে পারছে না। এমনকি মেডিকেল গ্লাভ তৈরির কারখানাগুলোও উৎপাদন বাড়াতে পারছে না। এ খাতে অন্তত ১২ হাজার শ্রমিক প্রয়োজন। মালয়েশিয়া সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওং সিউ হাই বলছেন, কর্মীর অভাবে তাদের চিপ তৈরির কারখানাগুলোকে ক্রেতা ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। কারণ মালয়েশিয়ার মানুষ এ ধরনের কারখানায় কাজ করতে চায় না। যারা কাজে ঢোকে, তারাও ছয় মাসের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেন। মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে পাম তেলের অবদান ৫ শতাংশ। কিন্তু শ্রমিকের অভাবের কারণে অনেক ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে চলতি বছর উৎপাদন ৩০ লাখ টন কমে যেতে পারে। এর ফলে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হবে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া, শ্রমিক সংকটের আশু সমাধান না হলে রাবার গ্লাভি শিল্প ৭০ কোটি টাকার আয় হারাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শ্রমিক সংকটে মালয়েশিয়া, বাতিল হচ্ছে বিদেশি অর্ডার
0
Share.