চা-শিল্প যেন ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে শ্রমিক ও মালিকদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান

0

ঢাকা অফিস: ঐতিহ্যবাহী চা-শিল্প যেন ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে শ্রমিক ও মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে মালিকদেরকে শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, শ্রমিকরা ভালো থাকলে এই শিল্প বাঁচবে। শনিবার বিকাল চারটার পর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মৌলভীবাজারের পাত্রখোলা চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তাকে স্বাগত জানান মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন দেশের ২৪১টি চা বাগানের সোয়া লাখ শ্রমিক। প্রথম চারদিন শ্রমিকরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর ১৩ আগস্ট থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন তারা। দুই সপ্তাহ ধর্মঘট চলার পর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা ১৭০ টাকা নির্ধারণ হয়। পরে ২৮ আগস্ট কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা। এরই মধ্যে চা শ্রমিকদের সঙ্গে আজ প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন সরকারের তরফে জানানো হয়। শনিবার বিকাল চারটার পর শুরু হওয়া ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান চা শ্রমিকরা। এসময় চা শ্রমিকরা কাজের প্রতি মনোযোগী হবেন বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে মালিকরাও শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হবেন বলে প্রত্যাশার কথা জানান সরকারপ্রধান। মৌলভীবাজারের একটি চা বাগানের শ্রমিক রীতা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আমাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা করায় আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। আর আপনিও আমাদের কথা ভাবেন। আমরা রাস্তা ঘাটেও এখন স্বাধীনভাবে চলোফেরা করতে পারি। আমরা চাই কোনোদিন আপনি আমাদের পাশ থেকে সরে যাবেন না। ‘আমরা চা শ্রমিকরা যে এতো অবহেলিত তা নিয়ে যে আপনি ভেবেছেন আর চিন্তা করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার সামনে আমরা কথা বলতে পারছি, আপনাকে দেখতে পারছি এটা অনেক সৌভাগ্যের’—বলেন রিতা। এসময় চা শ্রমিক রীতা কমলগঞ্জে এসে প্রধানমন্ত্রীকে চা খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেন। বক্তব্যে চা শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের সব মানুষের জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের কথা মাথায় রেখে ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। চা শ্রমিকদের ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, দেশের একটি মানুষও যেন কষ্টে না থাকে, ঠিকানাহীন না থাকে, গৃহহীন না থাকে সে লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা মেনে নেয়ায় চা শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। চা-শিল্প যেন ধ্বংস না সেদিকে খেয়াল রাখতে মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা-শ্রমিকরা ভালো থাকলে এই শিল্প বাঁচবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাওয়ার শ্রমিকদের দাবি পূরণে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অংশ নেন শ্রমিক ও তাদের নেতারা।

Share.