রবিবার, নভেম্বর ২৪

জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি শেষ পর্যন্ত মেনে নিলেন মমতা ব্যানার্জী

0

ডেস্ক রিপোর্ট: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচার চেয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের ‘দাবি’ কার্যত ‘মেনে নিলেন’ মমতা ব্যানার্জী। পুলিশের কমিশনার ভিনীত গোয়েল, ডিসি নর্থ গুপ্তাকে, স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস হালদার এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সোমবার গভীর রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সে বিষয়ে ঘোষণাও করেন। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতা পুলিশ কমিশনার ভিনীত গোয়েলকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন পুলিশ কমিশনার হচ্ছেন মনোজ কুমার বর্মা। মি. গোয়েলকে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের প্রধান পদে নিয়োজিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে অভিষেক গুপ্তাকে উত্তর কলকাতার ডেপুটি কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলসের দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়নের প্রধান করা হয়েছে। কৌস্তভ নায়েককে স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ ইনস্টিটিউটের নির্দেশক পদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, দেবাশিস হালদারকে সরিয়ে গণ স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার ও স্পেশাল ডিউটি পদে আনা হয়েছে। এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদার বলেন, “এই পদক্ষেপ আমাদের দাবির ন্যায্যতাকে প্রমাণ করে।” খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে গাফিলতি, তথ্য লোপাটের পাশাপাশি পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট দফতরের একাধিক কর্মকর্তাকে সরানোর দাবি জানিয়েছিলেন কর্মবিরতিতে থাকা জুনিয়র চিকিৎসকরা। দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর সোমবার সেই দাবি মেনে প্রশাসনিক রদবদলের প্রতিশ্রুতি দেন মমতা ব্যানার্জী। সোমবার গভীর রাতে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আমি মনে করি বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভিনীত (গোয়েল) যেখানে কাজ করতে চেয়েছেন, সেখানে পাঠানো হবে।” “ওদের (জুনিয়র ডাক্তারদের) চারটে দাবির মধ্যে প্রথমটা (ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্ত) সিবিআইয়ের হাতে। ওদের বাকি চারটে দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা, ডিসি নর্থকেও সরানো হয়েছে। আমি ওদের কাজে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।” আন্দোলনরত চিকিৎসকরা মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা এখনই আন্দোলন তুলে নিচ্ছেন না। সুপ্রিম কোর্টের তরফে একাধিকবার কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা ‘সময়’ নিতে চান। প্রশাসনিক এই বদল বাস্তবায়িত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান তারা। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ অনিকেত মাহাত বলেন, “আমাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সফল বৈঠক হয়েছে। আমাদের দাবির অনেকটাই মেনে নিয়েছেন। পুলিশ কমিশনার ভিনীত গোয়েল, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” তবে একে জয় বলে এখনই ভাবতে নারাজ তারা। মাহাত বলেছেন, “এটা কিছুটা হলেও আমাদের জয়। আমাদের চিকিৎসকদের এবং আমাদের সঙ্গে যে সাধারণ মানুষরা লড়ছেন তাদের সাফল্য। তবে পথ চলা এখনও বাকি আছে।” “এই আন্দোলন এখনই থামছে না। যতক্ষণ না আমরা এই অপসারণ বাস্তবায়িত হতে দেখছি ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।” এখন প্রশ্ন হলো জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে কেন ‘পিছু হঠল’ রাজ্য সরকার?

Share.