আমেরিকায় মৃত্যুর মিছিলে আরও তিন বাংলাদেশি, জীবন দিলেন মোট ২৩৭ জন

0

ডেস্ক রিপোর্ট: আমেরিকায় করোনায় মানুষের মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন যেন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কোনোভাবেই মৃত্যুর মিছিলের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একগুঁয়েমির কারণে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করছেন। তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লকডাউনে থাকা স্টেটগুলো রি-ওপেন করতে মরিয়া।আবার যেসব স্টেটে রিপাবলিকান গভর্নর রয়েছেন তারা ট্রাম্পের সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্টেট খুলে দিয়েছেন। যে কারণে আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়ছে। এই মৃত্যুর মিছিল আরও লম্বা হবে বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। স্টেট রি-ওপেনের এই সিদ্ধান্তকে অ্যান্থনি ফাউসি, নিউইয়র্ক টাইমসসহ অনেক বিশেষজ্ঞ আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন। যে কারণে আমেরিকায় করোনায় আক্রান্ত মৃত্যের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যাবে এবং তা দুই লাখে পৌঁছাতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আমেরিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ ৩৭ হাজার এবং মৃত্যের সংখ্যা প্রায় ৭২ হাজার। অন্যদিকে নিউইয়র্ক স্টেটে করোনায় আক্রান্ত তিন লাখ ২৫ হাজার এবং মৃত্যের সংখ্যা ২৫ হাজারের উপরে।নিউইয়র্ক সিটির গভর্নর এন্ড্রু কুমো বলেছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্কে প্রাণ হারিয়েছে ২৩০ জন। যার মধ্যে ২০৩ জন হাসপাতালে এবং ২৭ জন নার্সিং হোমে। তিনি স্টেট খোলার ব্যাপারে বলেন, আমরা এখনো কঠিন সময় অতিক্রম করছি। আমরা করোনার পাহাড় থেকে নামতে শুরু করেছি। তবে আমরা মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্টেট ওপেন করতে চাই না। কারণ আমাদের কাছে অর্থের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। অন্যদিকে মেয়র বিল ডি ব্লাজিও বলেছেন, সেপ্টেম্বরের আগে সম্পূর্ণভাবে নিউইয়র্ক সিটি খোলা সম্ভব নয়। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও তিন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে আমেরিকায় করোনায় ২৩৭ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তারা হলেন-নিউইয়র্কের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন যশোর সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকার উপদেষ্টা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের উপদেষ্টা এবং যশোরের প্রিয়মুখ মোহাম্মদ মাহবুবুল হক করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৫ এপ্রিল লংআইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে, নাতি, নাতনি, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। জানা গেছে, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে লংআইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি তিন সপ্তাহ মরণব্যাধী করোনার সঙ্গে লড়াই করে অবশেষ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মরহুম মাহবুবুল হকের বড় ছেলে মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম অনিক দীর্ঘদিন ধরেই নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। তিনি অনিকের সাথেই তার জ্যামাইকার বাসায় থাকতেন।উল্লেখ্য, তার দেশের বাড়ি বাংলাদেশের যশোর জেলার পুরাতন কসবা এলাকায়। তার মৃত্যুতে যশোর সোসাইটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির, সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম সুজনসহ সব কর্মকর্তা এবং ফোরামের সভাপতি নাছিম আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।নিউইয়র্কের এলেমহার্স্টে বসবাসকারী নজরুল ইসলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৫ মে নিউইয়র্কের এক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। জানা গেছে তিনি নিউইয়র্কে তিনি ট্যাক্সি চালাতেন। নিউইয়র্কে বসবাসকারী হাজী আব্দুল হাফিজ দুদু মিয়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ৫ এপ্রিল নিউইয়র্কের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

Share.