এতিমরা একা নয়; যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এতিমদের পাশে আছিঃ প্রধানমন্ত্রী

0

ঢাকা অফিস: মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৫০ হাজার বার কোরআন খতম এবং জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার (১৪ আগস্ট) সমাজসেবা অধিদফতরে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা এতিম তাদের ব্যথা আমি বুঝি। আমিও একদিন ঘুম থেকে উঠে শুনি আমার বাবা-মা-ভাইসহ কেউ নেই। যারা এতিম তারা একা নও। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন তোমাদের (এতিমদের) পাশে আমি আছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শহীদদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তোমরা যারা এতিম তাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তোমরা প্রতিটি শিশু যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারো এজন্য তোমাদের ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। বাবা-মা কারো চিরকাল থাকে না। তোমরা মানুষের মতো মানুষ হলে বাবা-মা যেখানেই থাকুক, তারা তোমাদের জন্য দোয়া করবেন। মানুষ হতে পারলে তোমরাও একদিন এতিমদের পাশে দাঁড়াতে পারবে।’তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার ছোট বোন শেখ রেহানা সবসময় তোমাদের মতো এতিম এবং অসহায়দের কথা ভাবি। এজন্য তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কিভাবে দেওয়া যায, আমরা সে চিন্তা করি। আমাদের জীবনে তোমরাই সবচেয়ে আপনজন। এজন্য আমাদের পরিবারে যে কারো জন্মদিনে, বাইরে বড় করে কোনো অনুষ্ঠান না করে, তোমাদের মতো এতিমদের কাছে মিষ্টি ও খাবার পাঠাই।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে চেয়েছিলেন। এদেশকে করতে চেয়েছিলেন সোনার বাংলা। ঘাতকরা তাকে সে সময় দেয়নি। কিন্তু আমি আমার সবটুকু সাধ্য দিয়ে কাজ করে যাবো, তার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে, যাতে তার আত্মা শান্তি পায় এবং রক্ত বৃথা না যায়’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ একটা শোক সইতে পারে না। আর আমরা কী সহ্য করে আছি… শুধু একটা চিন্তা করে যে, এই দেশটা আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, আমি এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই। কাজেই আমার যতটুকু সাধ্য, সেইটুকু আমরা করে দিয়ে যাব; যেন তার আত্মাটা শান্তি পায় এবং এই রক্ত যেন বৃথা না যায়। যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘাতকের বুলেটে জীবন দিতে হয়েছে, সেই স্বপ্নপূরণে সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবেন বলেও জানান শেখ হাসিনা।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাকে (বঙ্গবন্ধু) যারা হত্যা করেছে, তারা ঘৃণ্য। তাদের বিচার করেছি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সেই শক্তি দিয়েছেন আমাদের। ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে দিয়ে তাদের বিচার করতে পেরেছি। এতে আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া আদায় করি। আওয়ামী লীগকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রেখে দেশসেবার সুযোগ করে দেয়ায় দেশের মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণকে, যারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন এবং আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সব সহযোগী সংগঠনকে, যারা সবসময় আমার পাশে থেকে আমাকে শক্তি জুগিয়েছে, একটা পরিবারের মতো আমি পেয়েছি। শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা স্মরণ করার পাশাপাশি নিজের ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটানোর কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন। অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে, সমাজসেবা অধিদফতর প্রান্তে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ উদ্দিন খান খসরু এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জয়নুল বারীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Share.