এসি নয়, গ্যাস লাইন থেকে মসজিদে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিস

0

ঢাকা অফিস: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন তল্লা চামার বাড়ি বাইতুল সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে অনেকেই এটি বিস্ফোরণের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করলেও মূলত তা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ কথা জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন।আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, মসজিদের নিচ দিয়ে (মেঝেতে) একটি গ্যাস পাইপ রয়েছে। আর এ পাইপের লিকেজ দিয়ে মসজিদের ভেতর গ্যাস জমা হয়। মসজিদে এসি চলার কারণে দরজা জানালা সব বন্ধ রাখা হয়। আলো বাতাস বের হতে পারে না। ফলে নির্গত গ্যাস বের হতে পারেনি। বিস্ফোরণের আগে বিদ্যুতের কোনো কিছু জালানোর সময় স্পার্কিং করে। আর সেই স্পার্কিং থেকে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।তিনি আরও বলেন, মসজিদের মেঝেতে থাকা পানিতে গ্যাসের বুদবুদ ওঠায় সন্দেহ হয়। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় মসজিদের নিচ দিয়ে তিতাস গ্যাসের অনেকগুলো লাইন গেছে। আর পাইপগুলোর প্রতিটিতে একাধিক লিকেজ রয়েছে। সেই লিকেজের গ্যাস সব সময় মসজিদে ওঠতো। আর নামাজের আগে থেকে মসজিদের দরজা জানালা বন্ধ করে এসি চালু করার ফলে পুরো রুমে এসি ও গ্যাস মিশে যায়। আর তাতে করে ভয়াবহ এ বিস্ফোরণ ঘটে। এসি বিস্ফোরণ হওয়ার কারণ হলো এসিতে গ্যাস ছিল।ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধারণা করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দ্রুত এখানে এসে আমাদের ধারণাকে নিশ্চিত করে। তারা জানান- গ্যাসের লাইন থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে।এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, মসজিদের ভেতর দিয়ে গ্যাস লাইন এবং গ্যাস লাইনে লিকেজের সমস্যা বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বলার পরও তারা কর্ণপাত করেনি। এমনকি লাইন সরানোর জন্য তিতাসের লোকজন মোটা অংকের টাকা দাবি করে। যার কারণে এলাকার লোকজন ও মসজিদ কমিটি হতাশা নিয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষকে আর কিছু বলেনি। তিতাসের গাফলতির কারণে এ বিস্ফোরণ ঘটলো। এই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ তিতাস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন এলাকাবাসী।উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের ভেতরে থাকা প্রায় ৪০ জনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।বিস্ফোরণের ঘটনায় শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।

Share.