কৃষিখাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে: হাছান মাহমুদ

0

ঢাকা অফিস: তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কৃষিখাতে বাংলাদেশের অর্জন বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। আমাদের খাদ্য উৎপাদন গত ৫০ বছর চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা শুধু বিশ্বকেই নয় বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকেও বিস্মিত করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত ‘বিজয়ের ৫০ বছর: কৃষিখাতে অর্জন’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশকে আজ পৃথিবীর সামনে কেসস্টাডি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের যে দেশে মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন, মানুষের ঘনত্ব সর্বোচ্চ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যার নিত্যসঙ্গী, প্রতিবছর বন্যায় যে দেশের প্রায় অর্ধেক স্থলভূমি পানিতে তলিয়ে যায়, সেই দেশ এ সমস্ত কিছু মোকাবিলা করে কিভাবে কৃষিতে বিস্ময়কর উৎপাদনবৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছে সেটি সত্যিই পৃথিবীর সামনে উদাহরণ। কৃষিতে বিস্ময়কর অর্জনের জন্য কৃষিবিদ ও কৃষকদের অবদানকে সবচেয়ে বড় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষিবিদরাই ফসলের উচ্চ ফলনশীল ও উপকূলে আবাদযোগ্য লবণাক্ততাসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলো আমাদের জন্য সম্পদ, পৃথিবীর জন্যও সম্পদ। যা না হলে আজ আমাদের পক্ষে এই অর্জন সম্ভব হতো না। বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম দেশ অথচ ধান উৎপাদনে চতুর্থ, মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে সপ্তম, আলু উৎপাদনে সপ্তম। নেপালে যখন ভূমিকম্প হলো আমরা ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল দিয়েছি। এটি কোনো জাদুর কারণে নয় বরং বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে। সতর্কবাণী উচ্চারণ করে পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে কৃষিজমির পরিমাণ গত ৫০ বছরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমেছে অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি-কলকারখানার কারণে। এখন ৩০ শতাংশ মানুষ নগরবাসী, ১৫ বছর পর তা প্রায় ৫০ শতাংশ হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জমির উৎপাদন ক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। দেশে প্রতিবছর এক শতাংশ হারে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। বিশ বছর পর আমাদের সব উদ্ভাবন কাজে লাগিয়েও আজকের মতো উৎপাদন যে সম্ভব হবে না, তা সবার ভাবা প্রয়োজন। সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নগর কৃষিকে মূলধারার কৃষির সঙ্গে যুক্ত করে কৃষি উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন এবং এবিষয়ে কৃষিবিদ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম সাহেবের পরামর্শ আমাদের এগিয়ে নেবে। বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জদুল হাসানের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কৃষি অর্থনীতিবিদ মো. মকবুল হোসেন এবং হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান তাদের আলোচনায় কৃষিখাতে দেশের অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন।

Share.