খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

0

ঢাকা অফিস: চিকিৎসকসহ জনবলসংকট প্রকট হওয়ায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের ১৬টি পদের মধ্যে রয়েছেন মাত্র দুই জন। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। নিরুপায় হয়ে এসব দরিদ্র মানুষদের চিকিৎসা নিতে পাঠানো হচ্ছে গোপালগঞ্জ ও খুলনা মেডিক্যালে। মোল্লাহাটবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকট সমাধানের দাবি দাবি স্থানীয়দের। মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, মোল্লাহাটের সাতটি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসা মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলার নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ওপর নির্ভরশীল। ১৯৬৫ সালে যাত্রা শুরু করা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১৯৮৬ সালে ৩১ সয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পরে ২০১৭ সালে এটি ৫০ সয্যায় উন্নীত করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে আরও জানা গেছে, এখানে তিনটি এক্সরে মেশিনের অপারেটর না থাকায় ৯ বছর ধরে নষ্ট রয়েছে। আর টেকনিশিয়ান না থাকায় বন্ধ রয়েছে প্যাথলজি বিভাগ। এদিকে পরিধি বাড়লেও এখানে নতুন কোনও জনবল নিয়োগ দেওয়া ও আসবাবপত্র পাঠানো হয়নি। তাছাড়া হাসপাতালের চারদিক ও ড্রেনের দিকে তাকালে মনে হবে এটি কোনও হাসপাতাল নয় যেন ময়লার ভাগাড়। চিকিৎসকদের বসবাসের জন্য নির্মিত আবাসস্থল অনেকগুলোই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ডাক্তার এবং নার্স ছাড়াও দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতেও রয়েছে নজিরবিহীন শূন্যতা। শিশু জয়ন্তিকে (৪) নিয়ে তার চিকিৎসার জন্য মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন মা শেফালী রানী সাহা। তিনি বলেন, কোনও শিশু চিকিৎসক নেই। বাচ্চাকে নিয়ে চিন্তায় পড়েছি। এখন ছেলের চিকিৎসার জন্য পাশ্ববর্তী গোপালগঞ্জে যেতে হবে যা একদিকে ব্যয়বহুল অন্যদিকে নিয়ে যেতে অনেক সময়েরও প্রয়োজন। চিকিৎসা নিতে আসা মহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির ভেতরে আসলে মনে হবে এটা কোনও হাসপাতাল নয়, চারিদিকে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। পরিষ্কার করার কোনও লোক নেই। তাছাড়া এখানে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষারও ব্যবস্থা নেই। মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘চিকিৎসক ও কর্মচারীর সংকটেই মূলত স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ সয্যার বিপরীতে এখনও জনবল নিয়োগ হয়নি। ৩১ সয্যার জনবলেও রয়েছে ব্যাপক সংকট। আর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করাও সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

Share.