নোয়াখালীতে এবার তরুণীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাতভর নির্যাতন

0

ঢাকা অফিস: নোয়াখালীর মাইজদী থেকে তুলে নিয়ে নারীকে (১৯) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাতভর মারধর করেছে তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পী (২৯) ও তার তিন সহযোগী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই নারীর সাবেক স্বামীসহ তিনজন নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে তুলে নিয়ে এমন নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাবেক স্বামীসহ চারজন ও সিএনজি চালকসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে ভুক্তভোগী নিজেই মামলা করেছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এখন এক আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই নারী। আসামিরা হলেন, ওই তরুণীর সাবেক স্বামী কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামের মো. ইউসুফের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাপ্পী, তার সহযোগী একই গ্রামের রহিম (২৪), আরমান (২৫) ও সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাগর (৩৫)। এদের কারও বাবার নাম জানা যায়নি। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গেলো বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নিজ কর্মস্থল জেলা শহর মাইজদীর গ্রিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাইজদীস্থ হরিনারায়ণপুরের বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষানবিশ ওই নার্স। মাইজদী পেট্রোল পাম্পের সামনে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এ সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সামনে এসে দাঁড়ালে তিনি গন্তব্যে যাবার জন্য উঠে পড়েন। পরে ওই গাড়িটি একটু সামনে গেলে দুজন যাত্রী সামনের সিটে ওঠেন। আর একটু সামনে গেলে তার সাবেক স্বামী ও আরও একজন ভিকটিমের দুই পাশে উঠে বসেন। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠার পর থেকেই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে তার সাবেক স্বামী বাপ্পী ও তার সহযোগী রহিম (২৪)। চোখ-মুখ চেপে ধরে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যায় তাকে। সিএনজি থেকে নামানোর পর বুঝতে পারে এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পীর বাড়ি। ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই নেই। সিএনজিতে মারতে মারতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। ঘরে ঢুকিয়েও বেদম মারধর করে তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় জ্বলন্ত সিগারেটের আগুনে মুখমণ্ডলে ছাঁকা দেয়া ও অপর দুইজন ধর্ষণের চেষ্টা করে। কিন্তু নির্যাতন সহ্য করে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পান ওই তরুণী। ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকে এ সুযোগে পালিয়ে মাইজদী চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেন তিনি। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় রয়েছেন চিকিৎসাধীন। রাতে চাচার সহায়তায় মামলা করেন থানায়। স্বজনরা জানান, ছোট বেলায় বাবাকে হারান এই ভিকটিম। নতুন করে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন মাও। অভিভাবক শূন্য হয়ে নানীর কাছেই বড় হন তিনি। নবগ্রামে নানীর কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পীর নজরে পড়েন তিনি। বাপ্পী অনেকটা জোর করে অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই তুচ্ছ কারণে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হতো তাকে। মারধর করতেন শাশুড়ি, ননদ ও দেবর। গেলো দুই মাস আগে তাদের ডিভোর্স হয়। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবীর হোসেন  জানান, রাতে ভুক্তভোগীর মামলা নেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Share.