পারভেজ মোশাররফের মরদেহ তিনদিন পার্লামেন্টের সামনে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ

0

ডেস্ক রিপোর্ট: রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে গত মঙ্গলবার। পাকিস্তানের একটি বিশেষ আদালত নজিরবিহীন এই রায়ের সঙ্গে এক আদেশে বলেছেন, মৃত্যুদণ্ডের আগে মারা গেলে পারভেজ মোশাররফের মরদেহ পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের বিশেষ এক আদালত পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ প্রথমবারের মতো দেশটির কোনো স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে এমন রায় দেয়। তার দুদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ১৬৯ পাতার ওই রায়ের বিস্তারিত প্রকাশ হলে তা থেকেই এই তথ্য জানা গেছে। অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করার মতো রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মোশাররফকে এই সাজা দেয়া হলো। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। যদিও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে আসছেন সাবেক এই স্বৈরশাসক। বর্তমানে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। রায়ে বলা হচ্ছে, ‘আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছি পলাতক দোষী ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য সবরকম চেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সাজা কার্যকরের আগেই যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে ইসলামাবাদের ডি-চকে তার মরদেহ নিয়ে সেখানে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’ প্রসঙ্গত, ডি-চক স্থানটি পাকিস্তান পার্লামেন্টের কাছেই। রায় ঘোষণার পরই এটিকে ‘বেদনাদায়ক ঘটনা’ হিসেবে অভিহিত করেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। আর পাকিস্তানে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকার রায়কে ‘অন্যায়’ দাবি করে বলেছে, আপিল শুনানির সময় অসুস্থ ও স্বেচ্ছা নির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোশাররফের পক্ষে থাকবে তারা। দুবাইয়ে তিনবছর ধরে পারভেজ মোশাররফের চিকিৎসা চলছে তার। রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আমার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাইছেন। তারাই মামলা করেছিলেন।’ প্রসঙ্গত, তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা কম, তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাকে দেশে ফিরতেই হবে। পারভেজ মোশাররফ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালের নভেম্বরে তিনি দেশটির সংবিধান বাতিল করে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তারপর বিক্ষোভ শুরু হলে অভিশংসনের ঝুঁকি এড়াতে ২০০৮ সালে পদত্যাগ করেন মোশাররফ।

Share.