রিজভীকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে আদালতে আনা-নেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর

0

ঢাকা অফিস: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দি রুহুল কবির রিজভীকে আজ বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে ঢাকার সিএমএম কোর্টে আনা-নেওয়ার অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম। তিনি বলেন, ‘রুহুল কবির রিজভী একজন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি। তাকে সর্বদা লাঠির ওপর ভর দিয়ে চলতে হয়। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হলেও অন্যের সাহায্য দরকার হয়। এমন একজন ব্যক্তিকে সেই কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুরনো ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে এবং পৌনে ১২টার দিকে একইভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ এ ধরনের ঘটনাকে অমানবিক, অসাংবিধানিক ও নিষ্ঠুর আচরণ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘রুহুল কবির রিজভী কারাগারে যাওয়ার আগে অনেকটা সুস্থ ছিলেন’ উল্লেখ করে আরজুমান আরা বেগম গণমাধ্যমকে আরও বলেন, ‘কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বেড়েছে। মুখের দিকে তাকালে চেনা যায় না। হাত ও মুখের চামড়া কেমন যেন কালচে হয়ে গেছে। এলোমোলো চেহারা।’ ‘আসলে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে কিনা বোঝা মুশকিল’ এমন মন্তব্যও করেন রিজভীর স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একটি প্রিজন ভ্যানে করে আজ সকালে রিজভীকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম কোর্টে আনা হয়। আমি ঠিক জানি না প্রিজনভ্যানে বসার কোনো ব্যবস্থা থাকে কিনা? তবে রিজভীর সঙ্গে কথা বলে জানলাম পুরো রাস্তায় তাকে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে। এসময় তাকে বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল। ঠিক একইভাবে পৌনে ১২টার দিকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়েই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আদালতে রুহুল কবির রিজভীকে দেখার পর নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। তাকে চিনতে যে কারো কষ্ট হবে। রিজভী শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার শরীর ভালো নেই। তার অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা তার নিয়মিত খোঁজখবর পাই না।’ রিজভীর স্ত্রী বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর মাঝেমধ্যে তার পেটে সমস্যা হতো। সেই থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানিও খান না। উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই দিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও হামলা-মামলা নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করতেন।

Share.