শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

0

বাংলাদেশ থেকে  শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনে স্ত্রীকে হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলায় এমদাদুল হক লালু (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান একমাত্র আসামির উপস্থিতিতে ওই রায় ঘোষণা করেন। এমদাদুল হক সদর উপজেলার চরমুচারিয়া ইউনিয়নের মুকসুদপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান, গত ২০১০ সালে সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘড়িপাড়া এলাকার আব্দুর রশিদের মেয়ে রোখসানা খাতুনের বিয়ে হয় চরমুচারিয়া ইউনিয়নের মুকসুদপুর এলাকার বেসরকারি চাকরিজীবী এমদাদুল হক লালুর সাথে। বিয়ের পর রোখসানার পিতা আসবাবপত্র, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দিয়েছিলেন। বিয়ের প্রায় ৫ বছর পর রোখসানার স্বামী এমদাদুল হক চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসে এবং আরও যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রোখসানাকে মারধর করে গুরুতর আহত করে এবং মুখে বিষ ঢেলে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। পরদিন ৭ সেপ্টেম্বর রোখসানা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওই ঘটনায় প্রথমে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হলেও ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্টে দেখা যায়, বিষ খেয়ে নয়, বরং মারপিটের জখমের কারণে মারা গেছেন রোখসানা। পরে ওই ঘটনায় নিহতের ভাই ডা. গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে এমদাদুল হক লালু, এমদাদুলের ভাই ও ভাবিসহ ৯জনকে স্বনামে এবং আরও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি একমাত্র এমদাদুল হক লালুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিচারিক পর্যায়ে বাদী, চিকিৎসক ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক) ধারায় আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি এমদাদুল হককে ওই আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এদিকে রায় পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু ও মামলার বাদী নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা।

 

 

 

Share.