সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ, কিন্তু মালিকানা এখন আর জনগণের কাছে নেই: জিএম কাদের

0

ঢাকা অফিস: সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ, কিন্তু মালিকানা এখন আর জনগণের কাছে নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। তিনি বলেছেন, দেশের সাধারণ মানুষ আবার ঔপনিবেশিক আমলের মতো প্রজা হয়ে গেছেন। আজ মঙ্গলবার জাপার বনানী কার্যালয়ে পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল পার্টির চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো উপলক্ষে মতবিনিময় সভাটি হয়। বিরোধীদলীয় উপনেতা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আগামী নির্বাচনে পরাজিত দলগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে যে দল পরাজিত হবে তারা হয়তো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন বাস্তবতায় দাঁড়িয়েছে।’ এ জন্য দেশের রাজনৈতিক নেতারাই দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিভিন্ন দেশের সরকার পরিবর্তনের ধারা উল্লেখ করে গোলাম কাদের বলেন, ‘বিদেশে শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পরিবর্তন ও গঠন হয়। কেউ পদত্যাগ করলে শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে তা পূরণ হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে নির্বাচন যেন যুদ্ধ, নির্বাচনে পরাজিত হলে তাকে মরতে হবে। এমন বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়নি, এমন বাংলাদেশের জন্য বীর শহীদরা আত্মত্যাগ করেননি।’ সংবিধান অনুযায়ী দেশের মালিক জনগণ, কিন্তু মালিকানা এখন আর জনগণের কাছে নেই- এমনই মনে করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান। বলেন, ‘জনগণ যাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন তারাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করবেন। কিন্তু এখন দেশের মালিকানা সাধারণ মানুষের কাছে নেই। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ যেন আবার ঔপনিবেশিক আমলের মতো প্রজা হয়ে গেছেন।’ বর্তমানে চরম সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সরকারের মিল খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বাস্তবতা অনেকটাই এক। শ্রীলঙ্কায় ১০ বছর গৃহযুদ্ধ চলেছে, সেখানে কোনো পর্যটক যায়নি কিন্তু দেশটি দেউলিয়া হয়নি। জবাবদিহিহীন সরকারের গোঁয়ার্তুমির ফলে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে। আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এর কিছুটা মিল রয়েছে।’ ‘অভিযোগ আছে লুটপাটের কারণে মেগা প্রকল্পগুলোতে অনেক বেশি ব্যয় হয়। ফলে ওই প্রকল্পের আয় দিয়ে ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু যখন সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে, তখন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পেতে পারে এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।’ বলেন গোলাম কাদের। মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টি কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন মুক্তি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হুমায়ুন খান, এম এ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

Share.