ডেস্ক রিপোর্ট: গত ফেব্রুয়ারিতে সুদানের স্বৈরশাসক ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করার সময় সমাবেশ থেকে তুলে নিয়ে এক শিক্ষককে গোয়েন্দা হেফাজতে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ২৯ কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সুদানের একটি আদালত। আহমেদ আল খায়ের (৩৬) নামে ওই শিক্ষককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবার পরে সোমবার তাদের ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক সাদক আবদেল রহমান। ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন ১৯৮৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। এ বছরের শুরুতে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হবার পরে তা স্বৈরশাসক বশিরের পদত্যাগের দাবিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়ে যায়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে সুদানের বিক্ষোভে কমপক্ষে ১৭৭ জন নিহত হয়েছেন। বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে সে দেশের সেনাবাহিনী। তবে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বশির ক্ষমতা ছাড়লেও সুদানের বিক্ষুব্ধ মানুষ রাস্তা থেকে সরেনি। সুদানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাসসালাতে গত ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা হেফাজতে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে ৩৬ বছর বয়সী ওই শিক্ষক কারাগারেই মারা যান। খায়েরের মৃত্যুর পর নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা প্রথমে তার পরিবারকে জানিয়েছিল যে তিনি বিষক্রিয়ায় মারা গেছেন। তবে তার কিছুদিন পরের এক তদন্তে বেরিয়ে আসে যে ওই শিক্ষককে প্রচণ্ড মারধর ও নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার শিক্ষক হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গোয়েন্দা হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনকারী কর্মকর্তাসহ ২৯ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন বিচারক। আর ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও চার গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি সাতজনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার কারণে খালাস পান তারা। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবারও আপিল করা হবে। সুদানে এই রায় ঘোষণার সময় আদালতের বাইরে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশ করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে জাতীয় পতাকা এবং অন্যরা আহমেদ আল খায়েরের ছবি নিয়ে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন।
সুদানে শিক্ষক হত্যার অভিযোগে ২৯ গোয়েন্দা কর্মকর্তার ফাঁসি
0
Share.