যোগী সরকার নির্লজ্জ : আদালত

0

ডেস্ক রিপোর্ট: সিএএ-বিরোধী ৫৩ জন আন্দোলনকারীর নাম দিয়ে জনসমক্ষে পোস্টার টানিয়েছিল উত্তর প্রদেশ সরকার। ১৬ মার্চের মধ্যে ওই পোস্টারগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণে এই ঘটনাকে প্রশাসনের ‘নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তা ‘সাধারণ মানুষের গোপনীয়তার ওপর হস্তক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্মৌর বড় রাস্তার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৫৩ জনের ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে পোস্টার টানায় যোগী প্রশাসন। তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার এস আর দারাপুরি, সমাজকর্মী মহম্মদ শোয়েব, কবি দীপক কবীর, কংগ্রেসের স্থানীয় মহিলা নেত্রী সাদাফ জাফরের মতো বিশিষ্টরা রয়েছেন। উত্তর প্রদেশ প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশেই ওই পোস্টারগুলো পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে টানানো হয়েছে। সোমবারের শুনানিতে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর আইনজীবীদের বলেন, ‘এসব ছবি টানিয়ে আপনারা সাধারণ মানুষের গোপনীয়তা, শ্রদ্ধা ও স্বাধীনতা নষ্ট করেছেন। আপনাদের উচিত ওই পোস্টারগুলো সরিয়ে ভুল সংশোধন করা।’ রায়ে বলা হয়েছে, ‘এই মামলা এমন নয় যে, কোনও ব্যক্তি অন্য কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করেছে, যাদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যানারে দেওয়া হয়েছে। বরং সাংবিধানিক মূল্যবোধে আঘাত করেছে এবং প্রশাসনের নির্লজ্জতা প্রদর্শন হয়েছে। এটা সরকারের অগণতান্ত্রিক কাজ, যাদের দায়িত্ব হলো সব সময় জনগণের সঙ্গে সম্মান ও সৌজন্যমূলক আচরণ করা, যাতে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষিত হয়।’ আদালতকে সরকারের তরফে যুক্তি দিয়ে আইনজীবীরা বলেন, ‘জনস্বার্থে হস্তক্ষেপ করছে আদালত।’ এর জবাবে বিচারপতিরা বলেন, ‘ন্যায়বিচারের জন্যই আদালত। চোখের সামনে কারও সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার হলে কোনও আদালতই চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারেন না।’ এর আগে রবিবারও সিএএ-বিরোধীদের পোস্টার টানানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে আদালত। ছুটির দিনেও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে শুনানির নজির খুব একটা নেই। অথচ সেই ঘটনাই ঘটেছিল গতকাল। সেই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর বলেছিলেন, ওই ঘটনায় ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।

Share.